পিকনিক স্পট, রিসোর্ট ও পার্ক ও সৌন্দের্যের সিলেট

সিলেট জেলা
  • শুকতারা নেচার রিসোর্ট: সিলেটের খাদিমনগরে গড়ে উঠেছে শুকতারা নেচার রিসোর্ট। পাহাড় আর জঙ্গল মিলেমিশে আছে এখানে। ঘরে বসেই উপভোগ করা যাবে পাহাড়ের মোহনীয় রূপ।
  • নাজিমগড় রিসোর্টসিলেট : পাঁচ একর জায়গার ওপর নির্মিত রিসোর্টটি সব বয়সীদের জন্যই উপযোগী। পাহাড়ের ঢেউ দেখার দারুণ জায়গা এটি। ১৫টি কটেজ আছে এখানে। রেস্টুরেন্টে অনেক পদের খাবার পাবেন। রিসোর্টে আছে বিশাল এক বাগান, পিকনিক ও ক্যাম্পিং স্পট। ঘুরে আসতে পারবেন নুড়ি পাথরের রাজ্য জাফলংয়ে। সিলেট শহর থেকে রিসোর্ট বাসে মাত্র ১৫ মিনিটের পথ। কটেজ ভাড়া পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা।
  • জাস্টাড হলিডে রিসোর্ট, সিলেট :  সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের পাশে দেশের প্রথম রিসোর্ট জাকারিয়া সিটি জেসটেট হলিডে রিসোর্ট। এখানে আছে কৃত্রিম হ্রদ, ৫০০ প্রজাতির ১ লাখেরও বেশি গাছগাছালি, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, টেনিস কোর্ট, লং টেনিস কোর্ট, জিমনেশিয়াম ও অডিটরিয়াম। জাকারিয়া সিটি জেসটেট হলিডে রিসোর্টের সহকারী ব্যবস্থাপক ইকবাল করিম মজুমদার বলেন, তাদের ৪৭টি কক্ষের ৯০ শতাংশ ১ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বুকিং হয়ে গেছে। এ রিসোর্টে প্রতি রাত থাকার জন্য খরচ পড়বে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে।
  • শ্রীপুর পিকনিক স্পটসিলেট : পাহাড়ের দেশ বলে খ্যাত জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর পিকনিক স্পটে ইচ্ছে করলেই আপনি বাদল দিনের ভ্রমন সেরে নিতে পারেন। নীরবতায় আচ্ছাদিত এই স্থানটির পরিবেশ আপনাকে দেবে অনাবিল আনন্দ। বৃষ্টি এলেও সমস্যায় পড়তে হবে না আপনাকে। বরং মনের ক্ষুদ্রতা দূর করে এই স্পটটি আপনাকে নিয়ে যাবে প্রকৃতির বিশালতায়। তখন আর ঘরে ফিরে আসতে ইচ্ছে করবে না। মন বলবে সেখানেই থেকে যেতে। শ্রীপুর। তিন অক্ষরের এই নামটির মধ্যে কেমন যেন ভ্রমনের একটা গন্ধ লেগে আছে। সিলেটে বেড়াতে এসে শ্রীপুর দর্শনে না গেলে যেন অপূর্ণতা থেকে যায়। শহর সিলেট থেকে ৬২ কিলোমিটার দূরে শ্রীপুরের অবস্থান। শ্রীপুর যাওয়ার পথেই আপনি ভ্রমনের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। কারণ সিলেট-তামাবিল সড়কের দু’পাশের প্রকৃতি আপনাকে সহসাই তার প্রেমে ফেলে দেবে। জৈন্তাপুর উপজেলা সদর থেকে শ্রীপুরের পথে রওয়ানা দেয়ার পর যে দৃশ্য চোখে পড়বে তাতে অনাবিল উচ্ছাস হৃদয়ে দোলা দেবে। মনে জাগবে শিহরন। শ্যামল প্রকৃতি আর মেঘেদের ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য কাছ থেকে দেখতে কার না ভালো লাগে। তাছাড়া দূর পাহাড়ের বুকে চিরে ঝড়ে পড়া ঝর্নার স্বচ্ছ জলরাশি আপনাকে কাছে নিয়ে যেতে চাইবে। কিন্তু সেই দৃশ্য দেখেই তৃপ্ত থাকতে হবে আপনাকে। কারণ ভারত ও বাংলাদেশের সীমা রেখা। এভাবেই এক সময় পৌঁছে যাবেন শ্যামল প্রকৃতির বুকে দাঁড়িয়ে থাকা শ্রীপুরে। শ্রীপুরে যাতায়াত করতে হলে সিলেট শহরে অবস্থান করাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, সিলেটে উন্নতমানের অসংখ্য হোটেল রয়েছে। সেখানে আপনি রাত্রি যাপনের পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়া সেরে নিতে পারবেন সহজে। এজন্য আপনাকে কোন সমস্যায় পড়তে হবে না। হোটেল ভাড়া অন্যান্য শহরের মতই। তবে খাবার ক্ষেত্রে ব্যয় করতে হবে একটু বেশি।
       মৌলভীবাজার জেলা
  • অ্যামাজন ফরেস্ট রিসোর্টমৌলভীবাজার : অ্যামাজন ফরেস্ট রিসোর্ট নতুন এ রিসোর্ট চালু হয়েছে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে। যেকোনো বাংলা খাবার পাবেন এখানে। চা-বাগানে বেড়ানোর পাশাপাশি পাহাড়ের কোলে অবকাশে আপনার আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে।
  • গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট এ্যান্ড গলফ, মৌলভীবাজার :  শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কের পাশে শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে রাধানগর এলাকায় ১৪ একর উঁচু-নিচু টিলাভূমির ওপর এ রিসোর্ট গড়ে তোলা হচ্ছে। এক্সার্শন অ্যান্ড রিসোর্টস বাংলাদেশ লিমিটেড বিলাসবহুল এ পাঁচ তারকা হোটেল ও রিসোর্টটি নির্মাণ করছে।
  • মৌ ভ্যালি পর্যটন  পিকনিক স্পটমৌলভীবাজার : শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার সড়ক ধরে যে কোন যানবাহনে মৌলভীবাজার থেকে ৫ কিলোমিটার এবং শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার অদূরে অবস্থিত মোকাম বাজার। বাজারের ভেতর দিয়ে দেওরাছড়া-কমলগঞ্জ সড়কের প্রায় অর্ধ কিলোমিটার সামনে এগোলেই প্রেমনগর চা বাগান। এ চা বাগান সংলগ্ন্ন এলাকায় পাহাড়ি টিলায় ২ হাজারের অধিক বৃক্ষবেষ্টিত নয়নাভিরাম বিশাল এলাকাজুড়ে পর্যটন ও পিকনিক স্পট মৌ ভ্যালির অবস্থান। সবুজ প্রকৃতিকে নিবিড়ভাবে উপভোগ করতে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে পর্যটননির্ভর নানাবিদ অবকাঠামো। সাজানো রয়েছে শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য বিভিন্ন খেলনার সামগ্রী দিয়ে। বিশাল টিলাঘেরা এ স্পটটির প্রতিটি গাছ সাজানো হয়েছে রঙিন করে। গাছনির্ভর এ স্পটটিতে গাছের ওপরে, তাঁবুতে এবং বিশেষ কাগজের তৈরি কটেজে থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। স্পটটিতে আছে পাকা কটেজও।
  • আমতলী নেচার রিসোর্ট শ্রীমঙ্গল,মৌলভীবাজার : আমতলী নেচার রিসোর্ট ঠিক এমনই এক সবুজে ঘেরা জায়গা। ঢাকা থেকে মাত্র চার ঘণ্টার দূরত্বে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানার খুব কাছেই আমতলী চা বাগান। আর এই চা বাগানেই রয়েছে একটি দারুণ রিসোর্ট। একদিকে চা বাগান, অন্যদিকে রবারের বন এই দুয়ে মিলে তৈরি হয়েছে এক নৈসর্গিক পরিবেশ, যা আপনাকে মুহূর্তে ভুলিয়ে দেবে যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি। স্বল্প পরিসরে তৈরি এই রিসোর্টটিতে রয়েছে থাকা-খাওয়ার আধুনিক সব ব্যবস্থা। দিনের বেলা বেড়ানোর জন্য বেছে নিতে পারেন আশপাশের চা বাগান, বন্যপ্রাণীদের সাহচর্য, সীতেশ বাবুর চিড়িয়াখানা, বাইক্কা বিলের অপূর্ব সৌন্দর্য আর সেই সঙ্গে জিভে জল আনা সব খাবার, এর সঙ্গে রাতে চাঁদের আলোয় বারবিকিউ পার্টি সব মিলিয়ে আপনার ছুটির দিন হয়ে উঠতে পারে অনেক বেশি আনন্দময় ও উত্তেজনাপূর্ণ। বছরের সব ঋতুতেই আপনি যেতে পারেন আমতলী। এদিক-ওদিক যাওয়ার জন্য প্রয়োজনে বাগান কর্তৃপক্ষ আপনাকে গাড়ির ব্যবস্থা করে দেবে। নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে, ভ্রমণপিপাসুদের মন জয় করে নিতে পারে আমতলী নেচার রিসোর্ট।
  • শ্রীমঙ্গল টি রিসোর্ট মৌলভীবাজার : শ্রীমঙ্গল শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে এ রিসোর্ট। চা বাগানের মাঝখানে এর অবস্থান। এখানে বাংলোর সংখ্যা ১০টি। বুকিং নিতে হবে কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে। যাঁরা প্রকৃতি ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য এটি স্বর্গরাজ্য। সব ধরনের খাবার পাবেন, সঙ্গে পাহাড়ি খাবারও। বাংলো ভাড়া তিন থেকে ছয় হাজার টাকা। রিসোর্টের নিজস্ব গাড়ি শহর থেকে আপনাকে নিয়ে যাবে। ভ্রমণপিপাসুরা যান্ত্রিক শহরের ক্লান্তি দূর করতে চারদিকে সবুজ বনানী, পাহাড়, লেক, জলধারা ও চা বাগান ঘেরা মনোরম প্রকৃতির লীলাভূমি শ্রীমঙ্গলে ছুটে আসেন। এখানে রয়েছে চা বাগান, বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র, রমেশ রাম গৌঢ়ের সাত রঙের চা, শ্যামলী পর্যটন, শ্যামলীর ডিপ ফিজাপ এরিয়া, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, রাবার, আনারস ও লেবু বাগান, লেক, মাগুরছড়া গ্যাসকূপ, পান পুঞ্জি, ওফিং হিল, বার্নিস টিলার আকাশছোঁয়া সবুজ মেলা, যজ্ঞ কুণ্ডের ধারা ঝরনা, নিমাই শিববাড়ী, সিতেশ দেবের বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন ও দেশের একমাত্র সাদা বাঘ, লাউয়াছড়ায় ভেষজ উদ্ভিদের বাগান, শতবর্ষের স্মৃতিবিজড়িত ডিনস্টন সিমেট্রি, চা-কন্যার ভাস্কর্য, আদিবাসী পল্লী, হাইল হাওর, বাইক্কা বিলে পর্যটন টাওয়ারসহ অনেক দর্শনীয় স্থান।
  • দুসাই হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডমৌলভীবাজার : একটি অত্যাধুনিক, অভিজাত, বিলাসবহুল পাঁচ-তারকা ইকো রিসোর্টের জন্য বাংলাদেশের এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এটিই হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম সত্যিকারের ইকো-বুটিক রিসোর্ট। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিভাগ সিলেটের চিরহরিৎ অঞ্চলেই গড়ে উঠছে এই রিসোর্ট।
        হবিগঞ্জ জেলা
  • সাতছড়ি উদ্যানহবিগঞ্জ : সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান বনভোজনের জন্য একটি আদর্শ জায়গা। রাজধানী থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত জাতীয় এ উদ্যানটিতে রয়েছে কয়েকটি বনভোজন কেন্দ্র। সঙ্গে সঙ্গে উপভোগ করা যাবে এখানকার নানান জীব বৈচিত্র্য। সাতছড়িতে রয়েছে প্রায় ১৪৯ প্রজাতির পাখি, ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৬ প্রজাতির উভচর প্রাণী। মুখপোড়া হনুমান, চশমা হনুমান, উলস্নুক, লজ্জাবতী বানর, কুলু বানরের মতো বিরল প্রাণীর দেখা মেলে এ উদ্যানে। এ ছাড়া মায়া হরিণ, খিদির শুকর, বন্য শুকর, বেজি, গন্ধ গোকুল, বনবিড়াল, মেছো বাঘ, কটকটি ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, গিরগিটি, বিভিন্ন রকম শাপ, গুই সাপ প্রভৃতি রয়েছে এ বনে। ফিঙ্গে, কাঠঠোকরা, মথুরা, বন মোরগ, ধনেশ, লাল ট্রগন, পেঁচা, সুই চোরা এ বনের উলেস্নখযোগ্য পাখি। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বনভোজন কেন্দ্র ব্যবহার করতে চাইলে জনপ্রতি ১০ টাকা হিসেবে দিতে হবে। এ ছাড়া কার, জিপ ও মাইক্রোবাস পার্কিং ২৫ টাকা।

No comments:

Post a Comment

Adbox