প্রতিটি দেশই ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্টের মেয়াদ দেখে

কামাল সাহেব দু-তিনদিনের জন্য নির্দিষ্ট একটি দেশে যেতে চান। সব কাগজপত্র তৈরি। পাসপোর্ট করেছেন কয়েক বছর আগেই। এখনো কয়েক মাস মেয়াদ আছে। সব কাগজপত্র নিয়ে তিনি নির্দিষ্ট দেশটির দূতাবাসে হাজির হলেন। সবকিছু দেখার পর দূতাবাস তাঁর ভিসার আবেদন গ্রহণ করেনি। কারণ হিসেবে বলা হলো, তাঁর পাসপোর্টে মেয়াদ ন্যূনতম ছয় মাস থাকতে হবে। কিন্তু তাঁর ক্ষেত্রে এর কয়েকদিন কম আছে।
বিষয়টি কামাল সাহেব ঘুণাক্ষরেও চিন্তা করেননি। অবশেষে কয়েকদিনের মধ্যে পাসপোর্ট নবায়ন করে ভিসার আবেদন করলেন তিনি।
শুধু না জানার কারণে অনেককেই পাসপোর্টের মেয়াদস্বল্পতায় কোনো কোনো দেশে ভিসার আবেদন করতে পারেন না। প্রতিটি দেশই ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্টের মেয়াদ দেখে। দেশ ছাড়ার তারিখ থেকে ভিসার মেয়াদ ছয় মাসের কম হলে অনেক দেশ ভিসা দেয় না।
বাংলাদেশেও বিদেশিদের কিছুদিন থাকার ভিসা আবেদন করতে পাসপোর্টের ন্যূনতম মেয়াদ ছয় মাস হতে হয়। ইউরোপের শেনজেন অঞ্চলের দেশসহ অনেক দেশের ক্ষেত্রেই এই সময়সীমা তিন মাস। আবার অনেক দেশের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা না থাকলেও মেয়াদ দেখা হয়। তাই কোনো দেশের ভিসার আবেদনের সময় এই শর্ত পূরণ হয়েছে কি না তা যাচাই করে নিতে হবে।
ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের সময়সীমার বিষয়টি অনেকের কাছেই অজানা। দীর্ঘদিন ধরেই এ নিয়ম আছে। তবে আগে এর প্রয়োগে তেমন কড়াকড়ি ছিল না। সম্প্রতি পাসপোর্টের ন্যূনতম সময়সীমা বেশ কড়াকড়িভাবে দেখা হয়।
কোনো দেশের ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের সময়সীমার বিষয়টি সব দেশের জন্যই সাধারণত একই হয়। এখান নির্দিষ্ট কোনো দেশের পাসপোর্টধারীদের ভিসার আবেদনে বাড়তি কোনো সুযোগ নেই। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভিসা ছাড়াই নির্দিষ্ট সময় ভ্রমণের সুযোগ থাকা কোনো দেশে পৌঁছানোর পর শুধু পাসপোর্টের মেয়াদের কারণে জটিলতায় পড়তে হয়। নির্দিষ্ট দেশে পৌঁছে বিমানবন্দর থেকেও ফিরে আসার নজির আছে। তাই ভিসা ছাড়া ভ্রমণের সুযোগ থাকা দেশের ক্ষেত্রেও পাসপোর্টের মেয়াদের বিষয়টি জেনে রাখা জরুরি।
যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্যমতে বিভিন্ন দেশে ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের ন্যূনতম সময়ের বিষয়টি তুলে ধরা হলো। এসব তালিকায়, বাংলাদেশিদের কাছে গুরুত্ব অনুযায়ী নির্দিষ্ট দেশগুলোকে ওপরে অবস্থান দেওয়া হয়েছে।
ভিসার আবেদনে পাসপোর্টে মেয়াদ ন্যূনতম ছয় মাস হতে হবে (ভিসার আবেদন অথবা ওই দেশের যাওয়ার জন্য নির্ধারিত সময় থেকে)
ভারত
নেপাল
ভুটান
শ্রীলঙ্কা
মিয়ানমার
চীন
থাইল্যান্ড
ভিয়েতনাম
মালয়েশিয়া
যুক্তরাষ্ট্র
ফ্রান্স
আয়ারল্যান্ড
মেক্সিকো
রাশিয়া
সৌদি আরব
ইরান
ইরাক
সিরিয়া
জর্ডান
সংযুক্ত আরব আমিরাত
ওমান
কাতার
ইন্দোনেশিয়া
লাওস
কম্বোডিয়া
পূর্ব তিমুর
মঙ্গোলিয়া
মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র
শাদ
কঙ্গো
আইভরি কোস্ট
ইথিওপিয়া
ইসরায়েল
জেরুজালেম
দক্ষিণ সুদান
সুদান
উগান্ডা
জিম্বাবুয়ে (শিথিলযোগ্য)
ভিসা পেতে পাসপোর্টে মেয়াদ ন্যূনতম তিন মাস হতে হবে
জার্মানি
স্পেন
ইতালি
সুইডেন
অস্ট্রিয়া
সাইপ্রাস
চেক রিপাবলিক  
ফিনল্যান্ড
পোল্যান্ড
পর্তুগাল
সুইজারল্যান্ড
ডেনমার্ক
আইসল্যান্ডস
হাঙ্গেরি
নেদারল্যান্ডস
লিথুয়ানিয়া
লুক্সেমবার্গ
মেসিডোনিয়া
নরওয়ে
ফিজি
লেবানন
ভিসার আবেদনে কোনো দেশে অবস্থানের সময় উল্লেখ করতে হয়। কোনো কোনো দেশে ওই সময়কেই পাসপোর্টের ন্যূনতম মেয়াদ হিসেবে ধরা হয় 
যুক্তরাজ্য
অস্ট্রেলিয়া
জাপান
স্কটল্যান্ড
গুয়াতেমালা
চিলি
ভিসা পেতে পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে, তবে ন্যূনতম মেয়াদ উল্লেখ নেই
কানাডা
নিউজিল্যান্ড
রোমানিয়া
ইউক্রেন
মিসর
মরক্কো
তিউনিসিয়া
আফগানিস্তান
ফিলিপাইন
দক্ষিণ কোরিয়া
উত্তর কোরিয়া
অ্যান্টার্কটিকা
আর্জেন্টিনা
কিউবা
ঘানা
হাইতি
মালি
সিয়েরা লিওন
জ্যামাইকা
লাইবেরিয়া
পেরু
* দক্ষিণ আফ্রিকা ও হংকং  (ভিসা পেতে পাসপোর্টের মেয়াদ ন্যূনতম এক মাস থাকতে হয়)
*তুরস্ক (ভিসা পেতে পাসপোর্টের মেয়াদ ন্যূনতম আট মাস থাকতে হয়)  

No comments:

Post a Comment

Adbox